দ্র কৃষক জাকির হোসেন ছোটবেলা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শ লালন করেন মনে প্রাণে।
তিনি সে নীতি আদর্শের ছাপ রেখেছেন নিজের হাতে চাষ করা এক টুকরো জমির বুকেও। কারও কোন ধরণের সহায়তা ছাড়াই বোরো ধানের চারা দিয়ে খেতে শিল্পীর মতো নিপুণ হাতে তৈরি করেছেন অনবদ্য সৃষ্টি।
ধানের চারা দিয়ে এঁকেছেন নৌকার প্রতিকৃতি। তার ওপরে লিখেছেন ‘মুজিব শতবর্ষ’। নিচে লিখেছেন ‘শেখ হাসিনা’। তার এ সৃষ্টি দেখতে প্রতিদিন বহু মানুষ ভিড় জমাচ্ছে খেতের চারপাশে। মুজিব আদর্শ অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে অন্যদেরও। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও জাকির হোসেনের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
কৃষক জাকির হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা সদরের নিকটবর্তী ডাকুয়া ইউনিয়নের আটখালী গ্রামে। অনেকটাই প্রান্তিক পর্যায়ের চাষী। নিজের মাত্র ৬০ শতক জমির বিভিন্ন ধরণের আবাদি ফসল দিয়ে কোনমতে চলে চার সদস্যের সংসার। নিজের বাড়ি নেই।
থাকেন বাবার সংসারে। ছোটবেলা থেকেই জাতির জনকের আদর্শ বুকে লালন করছেন। স্থানীয় ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও জড়িয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ কী ভাবে আরও মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায়, এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভাবনা চিন্তা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চল্লিশ বছর বয়স্ক জাকির হোসেন এ অনবদ্য উদ্যোগ নেন। পাশর্^বর্তী এক মালিকের কাছ থেকে এক হাজার টাকায় মাত্র চার শতক জমি চার মাসের জন্য ভাড়া নেন।
সেখানে বোরো আবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করতে গিয়েই ব্যতিক্রমি ভাবনার সফল বাস্তবায়ন করেন। খেতের বুকে বীজতলা দিয়ে তৈরি নৌকার প্রতিকৃতি ও তার ওপরে ‘মুজিব শতবর্ষ’ এবং নিচে ‘শেখ হাসিনা’ লেখা সৃষ্টিকর্মের পাশে দাঁড়িয়ে জাকির হোসেন বলেন, আরও বড় খেত নিয়ে এ সৃষ্টিকর্ম তৈরির চিন্তা ভাবনা ছিল। কিন্তু সে পরিমাণ জমি না থাকায় করতে পারি নি।
তাছাড়া বীজের চারা মূল খেতেও একই ভাবে রোপন করার মধ্যে দিয়ে ব্যতিক্রমী ভাবে চাষ করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু জমি স্বল্পতায় তাও করতে পারিনি। তবে ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু করার পরিকল্পনা আছে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনসভায় দেখেছি। কিন্তু কখনও কাছ থেকে দেখতে পাইনি।
জীবনে একবার ইচ্ছে আছে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে কাছ থেকে দেখার। তার সঙ্গে কথা বলারও ইচ্ছে আছে। কোন কিছু চাওয়া পাওয়া নয়। কেবলমাত্র বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি নিবেদিত প্রাণ একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাই। জাকির হোসেনের এ উদ্যোগ স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিন বহু মানুষ এ সৃষ্টি দেখতে খেতে ভিড় জমাচ্ছে। তারা ব্যাপক প্রশংসাও করছেন। পাশের গ্রাম থেকে খেত দেখতে এসে আরেক কৃষক হানিফ হাওলাদার বলেন, কৃষক জাকির হোসেন আমাদের মুখ উজ্জল করেছেন।
সোহরাব হোসেন বলেন, আমরাও ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে কিছু একটা করতে চাই। এ উদ্যোগের প্রশংসা করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার বলেন, আপনার কাছ থেকে বিষয়টা জানতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমরা শিঘ্রই খেত পরিদর্শন করবো এবং ওই কৃষককে কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, কৃষকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ঘটনা জানতে পেরেছি।
নিঃসন্দেহে এটি প্রশংসনীয় কাজ। খেত পরিদর্শন করা হবে।